স্টার্ফ রির্পোটার, মনিরামপুর (যশোর) : যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ফকির-রাস্তা বাজার আ.লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা এ সময় আ.লীগের অফিসের চেয়ার-টেবিলের পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করেছেন তারা তবে এ ব্যাপারে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল জানালেও নিশ্চুপ যেনো মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ এমনটা অভিযোগ করেছেন শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।

জানাযায়, গত ১১ জুলাই (সোমবার) সন্ধায় ঈদুল আযহার দ্বিতীয়দিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে বের হয় শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আলমগীর হোসেন পরবর্তী ১নং মুজগুন্নি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় কালে সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বে তার ভাই হোসেন, কালাম, টুকুসহ আনুমানিক ৬০-৭০ জন সন্ত্রাসী দেশিও অস্ত্র রাম দা, চাইনিজ কুড়াল,

হকিস্টিক ও জি,আই পাইম নিয়ে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনসহ তার নেতাকর্মীদের উপরে অতর্কিত হামলা করে এ সময় গুরুত্বর আহত হয় চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, উপজেলা আ.লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবু অজিত কুমার ঘোষ, মহিলা ইউপি সদস্য ছবিরুন্নেছা ছবিসহ ১০-১৫ জন পরবর্তী চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। সন্ত্রাসী হামলায় হাতের দুইটি আঙুল ভেঙে যায় ও পায়ে ব্যাপক ভাবে আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি।

এ সম্পর্কে যশোর জেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। এর অংশ হিসেবে চিনেটোলা বাজারের অবৈধ ফুটপাত ও ইজিবাইক স্ট্যান্ড সরিয়ে দিয়েছি। এই বাজার থেকে সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি ও তার চাচা আব্দুল হালিমসহ কতিপয় ব্যক্তি মাসে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন।

এ ছাড়াও মনিরামপুর থানার এস,আই হান্নান ও ডি,এস,বির সাইফুল স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নিয়ে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করত। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের শত্রু হয়েছি।

বর্তমানে সুন্দর পরিবেশে বাজার কার্যক্রম পরিচালনা করায় এলাকার চাঁদাবাজরা সবাই আমার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে বিভিন্ন সময় হামলা করছে।চেয়ারম্যান হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সন্ত্রাসী দ্বারা চারবার হামলার শিকার হয়েছি বলেন তিনি।

সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা যখন আ.লীগের অফিসসহ বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করে তখন আমি মনিরামপুর থানার ওসির সাথে কথা বলি এরপর ২ ঘণ্টা পার হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

এমনকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করার মামলাটি নিতে বললে তিনি বলেন এই মামলাটি কোন ধারায় নিতে হবে সেটা আমি জানিনা।

পরবর্তী ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মনিরামপুর থানার ওসিসহ কয়েকটা টিক শ্যামকুড় মোড়ে আসলে চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের ভাই উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন এরপর সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির সন্ত্রাসী বাহিনীর ৬ জনকে আটক করে মনিরামপুর থানা পুলিশ কিন্তু পরেন দিনই জামিনে মুক্ত হয়ে আসেন তারা।

গত ১৫ জুলাই (শুক্রবার) সন্ধায় শ্যামকুড় রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, বাংলাদেশ আ.লীগ গঠিত হয় ১৯৪৯ সালে রাজনীতিতে দাঙ্গা হাঙ্গামা মারামারি হয়েই থাকে তবে সেটা যদি বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আ.লীগের উপর হামলা করে সেটা এক ভাবে আমরা বুঝতে পারি।

কিন্তু যারা আ.লীগ করে তারাই আবার আ.লীগের নেতাকর্মীদের উপর অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ছে। শুধু তাই নয় বর্তমান শ্যামকুড় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি যে কিনা আ.লীগের বিশেষ একটি পদে রয়েছে তার নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি দেওয়াল থেকে টেনে ছিড়ে মাটিতে ফেলে কুপিয়েছে আমি বলতে চায় এটা কোন ধরণের আ.লীগের উপর শ্রদ্ধা ভালোবাসা?

যার আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা চলছি সেই জাতীয় জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির উপর যারা এমন অস্ত্র নিয়ে হামলা করতে পারে তারা কখনও আ.লীগ কর্মী হতে পারেনা আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মনিরামপুর উপজেলা আ.লীগের কাছে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করবো যারা আ.লীগের বিশেষ পদে থেকে এই কাজ করেছে সেই আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি ও তার ভাই আওয়ামী যুবলীগ নেতাকে আ.লীগের পদ থেকে বহিষ্কার করাসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

এ সময় বক্তব্যে উপজেলা আ.লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবু অজিত কুমার ঘোষ কান্না কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আ.লীগের রাজনীতি করি কিন্তু নিজের দলের নেতাকর্মীদের হাতে এমন এলোপাতাড়ি ভাবে মারই খেতে হবে কখনও ভাবতে পারিনি সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে জখম হয়েছি তারা রাম দা দিয়ে আমার মাথায় কোপ মেরেছে আমাকে ৪ টা সেলাই দিতে হয়েছে।

যে জন্ম না নিলে আমরা আজ স্বাধীন বাংলা পেতাম না তার ছবিটিও ভেঙে চুরমার করেছে আমরা এর সঠিক বিচার চাই। আমি আরও বলতে চাই ঘটনার আজ ৬ষ্ঠ দিন এখনও পর্যন্ত মনিরামপুর উপজেলা আ.লীগ এর কোন প্রতিবাদ জানায়নি তারা আ.লীগের অফিসসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করেছে সেটাও দেখতে আসেনি। আমি বিশেষ ভাবে অনুরোধ করবো যারা এ ধরণের অপরাধ করেছে তাদেরকে আ.লীগ থেকে বহিষ্কার করাসহ কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক।

সূত্র- প্রতিদিন বাংলাদেশ